সে অনেক কাল আগের কথা। ইন্টার শেষ। সবাই সিওর যে পাশ করে গেছে। নিজেরটা সিওর যে ডাব্বা মারছি। তবুও ঢাকাতেই থেকে গেলাম… আরেক বারের জন্য চেষ্টা করতে! ইয়ারমেট বন্ধুরা সব চলছে ভর্তি পরীক্ষার কোচিং ক্লাস করতে। এক বন্ধু আর ঝামেলা না বাড়িয়ে সোজা চলে গেল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সাইন্সে। মেসে চলে এল কম্পিউটার। সাথে সাথে সবারই মোটামুটি কম্পিউটারে হাতে খড়ি হয়ে গেল। এমপি থ্রি, ভিডিও সিডি, কম্পিউটার গেম…আরো কত কি…! এক এক জন এক এক দিকে এক্সপার্ট হয়ে গেল। কেউ ফুটবলে গোল করায়, কেউ ক্রিকেটে প্রতিবলে ছক্কা মারায়, কেউ পারানয়েডে রেকর্ড স্কোরিং, কেউ বিভিন্ন রকম “ফাইল” শেয়ারিং-এ, ইত্যাদি ইত্যাতি। আমি এক্সপার্ট হয়ে গেলাম এম.পি.থ্রি শোনায়- বিশেষ করে এই গানটি শোনায়ঃ যেটুকু সময় তুমি থাকো পাশে…
ইন্টারে ডাব্বা মেরেও কেমন যেন এক উদাস উদাস ভাব। কোন কিছুতেই গা করছি না। নতুন করে পড়াশোনা তো হচ্ছেই না, বইগুলো চোখের সামনে থাকলেই বিরক্ত লাগছে। ওরা সকালে বেরিয়ে যায় কোচিং ক্লাস করতে। ঘুম থেকে দেরী করে উঠি। এটাই কম্পিউটারটা ধরার আমার পারফেক্ট টাইম। কম্পিউটারটা অন করি। গানটি আনলিমিটেড বার বাজে। গুন গুন করি। ফ্রেস হওয়া… নাস্তা… ইচ্ছে হলে খাই। বুয়া না এলে দুপুরের কিছু রান্না-বান্না। ডাল রান্না করতে তখন পুরো এক্সপার্ট হয়ে গেলাম। মেনুতে আরো আছে আলু আর ডিম ভর্তা। গানটা বাজতেই থাকে… বাকিটা সময় যেন মরণ আমার…
গানটা শুনতে শুনতে আসলে কি ভাবি? এতটুকু সময়ও কি কেউ পাশে থেকেছে! উম্ম্… তাহলে কেন শুনি? কেন ভালো লাগে? ওহ্হো…মনে মনে স্বপ্নের জাল বুনি, তাই না? …মনে হয় এদেহে প্রাণ আছে…
মন নেই, শুধু প্রাণটা নিয়েই বেঁচে থাকলাম…