হাইতির সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি দেখে আমরা সবাই কমবেশী শংকিত।ধারনা করা হয়, এরকম মানের একটা ভুমিকম্প বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকা বা চট্টগ্রামে হলে ক্ষয়ক্ষতি আরো বেশী হবে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নাই।
কিন্ত বাস্তবতাটা হলো, আমরা কয়েকদিন এই নিয়ে চায়ের কাপে, খবরের কাগজে- ব্লগে ঝড় তুলছি, তুলবো।একটু ভাববো। তারপর আবার সবই ভূলে যাব।যেভাবে আমরা অনিরাপদ ( বিপদজ্জনক কিনা জানি না, আমি বিশেষজ্ঞ নই) ভাবে সুউচ্চ অট্টালিকা বানাচ্ছি, সেইভাবে একের এক অট্টালিকা হতেই থাকবে। নিয়তির হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে আমরা সেইসব অট্টালিকায় বসবাসও করবো দিনের পর দিন ।
আমাদের নীতিনির্ধারক মহলের কি কখনো টনক নড়বে না। রাজউক, চউক বা সমান্তরাল সংস্থাগুলো কি তাদের বাড়ীঘর তৈরীর নীতি মালায় এরকম কিছু কি অন্তর্ভূক্ত করতে পারেন যে, নতুন বাড়ী তৈরীর সময় অবশ্যই ভূমিকম্প প্রতিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
আমি আগেই বলেছি আমি এই ব্যাপারে কোনো বিশেষজ্ঞ নই।যদি আমাদের মত দরিদ্র দেশের জন্য এটা কোনো ব্যয়বহুল ব্যবস্থা হয়, তাহলে আমাদের স্থাপত্যবিদরা কি পারেন না সহজলভ্য কোনো প্রযুক্তি বা নগর পরিকল্পনাবিদরা কি পারেন না এ ব্যাপারে কোনো বাস্তব সম্মত
পরিকল্পনা হাতে নিতে পারে? উদাহরণ স্বরূপ প্রস্তাব করা যেতে পারে- সদ্য নির্মিত যেসব বাড়ীতে এই ব্যবস্থা থাকবে, তারা কর প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় পাবেন ইত্যাদি।
আমি জানি অনেকে বলবেন, রাজউকের নীতিমালা মেনে এই দেশে বাড়ী বানানোই হয়ইবা কয়টা? কিন্ত চিন্তা করতে দোষ কি? আজকে এই ব্যাপারে কোনো নীতিমালা হলে, কেউ কেউ হয়তো মানবেন।ধীরে ধীরে ভূমিকম্প প্রতিরোধক ব্যবস্থা সম্বলিত বাড়ীঘর একটা স্বাভাবিক নিয়মে পরিনত হবে। একটা সভ্যতা, একটা জনপদ, বা একটা নগর গড়ে উঠতে সময় লাগে কমপক্ষে কয়েকশ বছর আর তা ধ্বংস হতে ঘন্টা খানিকের একটা ভূমিকম্পই যথেষ্ট।
আসুন ভূমিকম্প প্রতিরোধক অট্টালিকা নির্মান নীতিমালা তৈরীর ব্যপারে জনমত গড়ে তুলি আর সেই সাথে তার সফল বাস্তবায়ন করি।