ফুটপাত এই নিউইয়র্কেও আছে। দেশী ফুটপাতগুলোর মত ততটা ব্যস্ত না হলেও এখানেও মাঝে মাঝে দেখা যায় লোকজন ফুটপাতের একপাশ দখল করে বেচাকেনা করছে। এখানকার কাল্লু আর স্পানিশদের পাশাপাশি অনেক বাঙালীও চোখে পড়ে।
ছোটো ভাই গেছে দোকানের ভিতর কিছু কাঁচাবাজার করতে। রাস্তার পাশে গাড়ী পার্ক করে দাঁড়িয়ে আছি। বাঙালী লোকটি এসে পাশের ফুটপাতের জায়গাটা দখল করে দোকান সাজাচ্ছিল। কিছু করার নেই, তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম। কিছুক্ষণ পর পুলিশের গাড়ি। দুজন পুরুষ পুলিশ। লোকটার কাছ থেকে আইডি চেয়ে নিয়ে একজন টিকিট দিতে শুরু করলো। অন্যজন বোঝাচ্ছিল যে সে ফুটপাতের নিষিদ্ধ জায়গায় বেআইনী ভাবে দোকান খুলে পথচারীদের অসুবিধার সৃষ্টি করছে। লোকটি অসাধারণভাবে হঠাত কান্না শুরু করে দিল।
এইবার পুলিশ অফিসার দুজন অস্বস্তিতে পড়ে গেল। আমারও কেমন যেন লজ্জা লাগছিল। আর সরাসরি তাকাতে পারছিলাম না। কিন্তু কিছু তো করার নেই, চোখ চলে যাচ্ছিল ওদিকেই। পুলিশ দুজন এইবার নিজেদের মধ্যে চাওয়াচাওয়ি করছিল আর লোকটিকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল। লোকটির কান্না থামছে না দেখে টিকিটটাও হাতে ধরিয়ে দিতে পারছিল না। আবার চলেও যেতে পারছিল না। তখন একজন পুলিশ দেখলাম ওদিকটায় একটু সরে গিয়ে ওয়াকিটকিতে কথা বলছিল।
২/৩ মিনিট পরই আর একটা পুলিশের গাড়ি এসে হাজির। এবার নামল ২ জন মহিলা পুলিশ। এবার পুরুষ পুলিশ দুজন সরে গেল। নতুন মহিলা পুলিশ দুই জন লোকটির কাছে গিয়ে কিছু বোঝাচ্ছিল। একটু পরে কান্না থেমে গেল। এই না হলে মায়ের জাত। এসেই কান্না থামিয়ে দিল! ভাবছিলাম- ধূর… ছেলেদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না…।
ভাবনা শেষ হতে না হতেই দেখলাম পুলিশগুলো চলে যাচ্ছে। আর লোকটি হাতে টিকিট নিয়ে চোখ মুছছে হা করে পুলিশের চলে যাওয়ার দিতে তাকিয়ে আছে।