চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামোটিকরামপুর মহল্লার হোসেন আলীর (২৮) সাথে প্রেম ছিল স্থানীয় এক তরুণীর সঙ্গে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তিনি তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ২০০৮ সালের ৩১ আগস্ট হোসেন আলী ওই তরণীকে পটিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুরাতন বাজারের ভিড়িও ওয়ার্ল্ড সংলগ্ন একটি কে নিয়ে যান। তরুণীর অজান্তে হোসেন আলী তাদের শারীরিক সম্পর্কের চিত্র ধারন করেন গোপন ভিড়িও ক্যামেরায়। এরপর থেকেই শুরু হয় হোসেন আলীর হুমকি-দমকি। টাকা না দিলে তিনি ওই ভিড়িও চিত্রটি সিড়ি আকারে বাজারে ছেড়ে দেবেন বলে তরুণীটিকে ভয় দেখান। সেই থেকেই হোসেন আলী কে নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছেন ওই তরুণী। এভাবে ৬ মাস নিয়মিত টাকা দেন তরুণীটি। অতিষ্ট হয়ে ২০০৯ সালের ৮ ফেব্র“য়ারী তরুণীটি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। অনেক খোঁজাখুজির করে অভিভাবকরা তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। তাঁর কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি সব ঘটনা খুলে বলেন। প্রতারিত তরুণীর বড় ভাই গত ১০ই ফেব্র“য়ারী ০৯ বুধবার চারজনের নামোল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা করেন। অভিযোগে টিকরাম পুর মহল্লার হোসেন আলী ও বাবুল হোসেন,পুরাতন বাজারের আব্দু রাজ্জাক ও রেহাইচরের আশরাফুলের নাম রয়েছে। পুলিশ বুধবার তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তবে হোসেন আলী পলাতক রয়েছে। সদর থানার এসআই সোহরাব হোসেন বলেন,তরুণিিটর সঙ্গে হোসেন আলীর শারীরিক সম্পর্কের ভিড়িও সিড়ির মাস্টার প্রিন্ট আব্দু রাজ্জাকের মালিকানাধীন ভিড়িও ওয়ার্ল্ড থেকে জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা তরুণীটিকে ব্ল্যাক মেইল করার কথা স্বীকার ও করেছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে,চাঁপাইনবাবগঞ্জের তরুণ-তরুণীদের এমন গোপন ভিড়িও এখন অনেকের মোবাইল ফোনে। এমনি চারটি ভিড়িও চিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ নিয়ে অভিভাবক মহল উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংক। ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন,এসব পর্ণো ছবির এক পাত্র শহরের ইলেকট্রনিক সামগ্রী ব্যবসায়ীর ছেলে ছবি দেখে তাকে সনাক্ত করা গেছে। ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও করা হয়েছে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে ছেলেিেট গা ঢাকা দিয়েছে। তবে ওই ব্যবসায়ীর দাবি তাঁর ছেলে ঢাকায় থেকে পড়াশুনা করে। এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর ছেলে জড়িত কিনা সেটা তাঁর জানা নেই।ওসি আরো বলেন,আমরা অপর একটি মেয়ের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু ওই সব ভিড়িওর সঙ্গে মেয়ের জড়িত থাকার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। (প্রথম আলো) এটা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। সারা দেশে এরকম শত শত ঘটরা আমাদের সমাজ ও সভ্যতাকে তিলে তিলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্য সাইদুর রহমান বলেন,এটা মাদকের চেয়ে ও ভয়ংকর । অন্কুরেই এটা বিনষ্ট করতে হবে।
* বাংলাদেশে ভিড়িও ব্ল্যাক মেইলের ইতিহাস ঃ
# বাংলাদেশে প্রথম ভিড়িও ব্ল্যাকমেইল তৈরি করেন ২০০১ সালে ঢাকার গুলশান এলাকার এক ধনাঢ্য পরিবারের তিন সন্তান সুমন,পিন্টু,তুষার। সুমন তার বন্ধুদের সহায়তায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে অথবা নকল বিয়ের নাম করে ভিড়িও ব্ল্যাকমেইল সিড়ি করে তা বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আয় করে। এ ভিড়িও ব্ল্যাকমেইল পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে আরো টাকা আয় করার জন্য সুমন ও পিন্টু স’আদ্যর সংবলিত একটি বহুল পরিচিত পর্ণোগ্রাফি ওয়েবসাইট খুলে। এই পুরো সাইটটি বাংলাদেশের নাগরিক বলে গণ্য মেয়েদের ভিড়িও চিত্রের ওপর ভিত্তি করে চলে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সুমন পিন্টু নামক দুই নরপশু সাধারণ মেয়েদের হয়রানির জন্য এই ক্রেজটি চালু করে। এ পর্ণো সাইটটিতে দৈনিক আপলোড় হয় প্রায় এক হাজার ভিড়িও চিত্র এবং ডাইনলোড হয় প্রায় ২০ হাজার ভিড়িও চিত্র। কিন্তু দু:খ জনক হলেও সত্য যে,দেশের সম্ভবনাময় তরুণ সমাজ বিশেষ করে ছাত্র সমাজ এখন ওই কাজটিকে বিনোদন হিসাবে বিবেচনা করে।
# এককালের ডাকসাইটে ছাত্রনেতা থেকে এমপি হওয়া এক ব্যাক্তি,সেও সুমন-পিন্টুর মত বিভিন্ন কায়দায় ব্ল্যাকমেইল করে তা সিড়ি আকারে বাজারে বিক্র করে কোটিপতি বনে যায়।
# এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের এক ডাক্তার ,সেলিম নামক এব কব্যাক্তি,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকন,নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রের,শাহীন নামক উত্তরার এক ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান, লালমনিরহাট পানের দোকানদার,রাজশাহীর দুই প্রেমিক জুটির ভিড়িও ব্ল্যাকমেইল সিড়ির সন্ধান পাওয়া যায়।
# এছাড়াও বাংলাদেশে পর্ণোসিড়ির অধিকাংশই ব্ল্যাবমেইলের মাধ্যমে করা। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি সহজ লভ্য হওয়ায় এবং ভিড়িও মোবাইল হাতে হাতে পৌছার কারণে ভিড়িও ব্ল্যাকমেইল ব্যাপক বিস্তার লাভ করছে। সবচেয়ে বেশি আতংকের বিষয় যে,বর্তমানে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শ্রেণীর ছাত্র তার সহপাটি ছাত্রীকে মিথ্যা প্রলোভনে ও প্রতারনামূলক পন্থায় ডেটিংয়ের নামে নগরীর অভিজাত এলাকায় বাসায় নিয়ে যায়। ওই ছাত্র একা বা তার বন্ধুর সহায়তায় ভিড়িও ক্যামেরা চালু করে নির্ধারিত করে একস্থানে লুকিয়ে রাখে ওই ছাত্র-ছাত্রীর গল্প থেকে শুরু করে অশ্লীলতার সর্বশেষ পর্যায়ে পৌছে তার সম্পূর্ণটা ভিড়িও করে সিডি করে দেয় বন্ধুদের । বন্ধুরা ওই ভিসিড়ির কপি করে অবাধে পরিচিত জনদের দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়। যা কিনা পরবর্তীতে অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যায়। তারা তা বাজারজাত করে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়। এছাড়াও মডেলিং ,সিনেমা ও টেলিফিল্মের নায়িকা বা অভিনেত্রি করার নামে এক শক্তিশালী চক্র তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করে ভিড়িও সিড়ি বের করে । এভাবে কিছু অসাধুচক্র এবং ছাত্র নাধারী কিছু কুখ্যাত ছাত্রের প্রতারনায় পড়ে হাজার হাজার তরুণী অকালে সবকিছু হারিয়ে মৃত্যুর পথে পা বাড়ায়। এ ঘূণ্য কর্মকান্ডের কারণে নিরাপত্তাহীন দেশের নারী সমাজ,যুব সমাজ অবয়ের যাঁতাকলে আটকে যাচ্ছে। কিছু স্বার্থন্বেষী মহল ও আর্থিক লাভবান হওয়ার জন্য দেশের যুব সমাজ কে ধ্বংসের এ পথের পথিক বানাচ্ছে। বিশেষ করে কিছু সংঘবদ্ধ চক্র,কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অসাধু ছাত্র সহজ পন্থায় রোজগারের লোভনীয় পন্থা হিসাবে এটাকে বেছে নেয়। পরবর্তীতে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই এুনী রুখতে হবে এ ঘৃণ্য কর্মকান্ডকে। তা না হলে দেশের যুব স¤প্রদায়কে অবয় থেকে রা করা কঠিন হবে।
* নারী সমাজের কাছে আকুল আবেদন ঃ
হে নারী সমাজ! আপনারাই হলেন মায়ের জাতি ,আপনারা না হলে আমরা এ সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখতাম রা। পৃখিবীর সভ্যতা বির্নিমানে আপনাদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আপনাদের ব্যতীত পুরুষ জাতি চরম অসহায়। আর সেই পুরুষ জাতি আবার আপনাদের সর্বনাশ ঘটাচ্ছে। আমাদের সমাজ,আইন,আদালত আপনাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। তাই আপনাদের নিজেদের রা নিজেদেরকেই করতে হবে। বর্তমান অবরে এ যুগে তার প্রয়োজনীয়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আপনাদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, আপনারা পুরুষদের মন ভূলানো খথায় প্রতারিত হবেন না ,বিয়ের আগে প্রেম করতে যাবেন না,নিজেদের সৌন্দর্যকে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে রাখবেন। আধুনিকতার জোয়ারে গা ভাসিয়ে না দিয়ে ধর্মীয় জীবন-যাপন করুন,এবং একেকজন আদর্শ মা হয়ে আদর্শ জাতি গঠনে ভূমিকা পালন করুন,এটাই আপনাদের কাছে আগামী প্রজন্মের প্রত্যাশা।
* ভিড়িও ব্ল্যাকমেইল প্রতিরোধে করনীয় ঃ
১.সর্বপ্রথম সুমন-পিন্টু-তুষার সহ সকল পর্ণোগ্রাফী চক্রকে গ্রেফতার করে জনতার সামনে প্রকাশে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যাতে দেশের কোন যুবক এ ঘূণ্য কর্মকান্ড করতে দু:সাহস না দেখায়। তাদের পর্ণোওয়েভসাইট জরুরী ভিত্তিতে বন্ধ করে দেয়া।
২. পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রনের জন্য কঠোর আইন করা। এবং পিতা মাতাদের ও শাস্তির আওতায় আনা।
৩. জাতীয় প্রচার মাধ্যম গুলোকে গঠন ও প্রতিরোধমূলক ভূমিকা পালন করা। বরং জাতীয় প্রচার মাধ্যাম গুলোকে নীতিনৈতিকতা চর্চার কেন্দ্র বানানো।
৪. পর্ণো উপকরণ সমূহকে নিষিদ্ধ করে দেশব্যাপী অভিযান চালানো,পর্ণোসাইট সমূহ বন্ধ করে দেয়া। বেকার যুবকদের কার্যকর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। দেশব্যাপী সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
৫.ডিশ নামক দানবকে নিয়ন্ত্রনের মধ্যে নিয়ে আসা। গঠনমূলক চ্যানেল বাদে বাকীগুলো বন্ধ করে দেয়া।
৬. নীতি নৈতিকতার সমন্বয়ে শিা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা,ধর্মীয় শিার উপর গুরুত্ব দেয়া ও সহশিা বন্ধ করা।
এদেশ আমার আপনার সবার । এ দেশকে রা করা,এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। ল ল মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের ইজ্জত ভূলুন্ঠিত হওয়া খুবই লজ্জাজনক কাজ। তাদের রার জন্য দেশের যুব সমাজকে শপথবদ্ধ হতে হবে। স্বাধীন দেশে আর কোন নারীর সতীত্ব হারাতে আমরা দেবো না। নারী জাতি মায়ের জাতি। তাদের সেই মর্যাদার আসনে আসীন করে আসুন সুখী,সমৃদ্ধ দেশ গঠনে সকলে হাতে হাত রেখে ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে দেশ বিরোদী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সোনার বাংলা গড়ার জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করি। এটাই হোক তরুন সমাজের অঙ্গীকার।