ঈদ, দুর্গা–পূজা এগুলো এলো… চলে গেল। দীপাবলী আসছে চারদিকে জ্বলবে প্রদীপ, ঝল্–মল্ করবে অনেক মহল নিওন আর লেড্ আলোর মালিকায়… বাজী পুড়বে পটকা ফাটবে আর তারও শেষ হ‘বে। এসে ফিরে যাবে কৃস্টমাস, বড়দিন … পৃথিবীটা অক্লান্তভাবে ক‘রে চলবে সূযর্প্রদক্ষীন। এই–ই তো হ‘য়ে আসছে বহুকাল থেকে… যুগ যুগ ধরে।
ছেলে–মেয়েরা দিন গুনছে একটা নূতন জামা–প্যান্ট বা ফ্রকের অথবা একটা শাড়ীর আশায়। বধু–কণ্যার না বলা ক্ষীণ আশা, এক গোছা কাঁচের চুরি আর একটা নূতন কাপড়–এর। হায়রে সে পরিহাস, অনেক ক্ষেত্রেই এ ক্ষুদ্র আশাও অপরিপূর্ণ থেকে যায়। ছোট ছেলে–মেয়েদের অশ্রুসিক্ত ড্যাব–ডেবে চোখ আর বড়দের নিরব অভিমান নিয়ে আসে বেদনাপূর্ণ দীর্ঘশ্বাস হ‘য়ত সবার অলক্ষে ঝরে পরে – ধরে রাখতে না পারা অশ্রুধারা।
… এ শুধু গাঁয়ের কৃষক–কৃষাণীর বা ঢাকির বেদনাপূর্ণ কাহিনী নয়… এ হ‘ল বিত্তহীন মানুষদের ইতিকথা… সারাটা দেশময়।
স্বীকার করা যাক্, সবদেশের সকল উৎসবই রয়েছে অনাদি কাল থেকে শুরু করে আধুনিক সময় অবধি প্রচন্ডভাবে ব্যাবসা–বাণীজ্যের স্বার্থের সাথে মিশ্রিত। … তবুও অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে জনসাধারনের সাথে এই সব উৎসবের সামাজিক অর্থ জড়িত রয়েছে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে। সামাজিক যোগাযোগ আর এরই সঙ্গে এক পূর্ণ বৎসরের ক্লেশ এবং কাঠিন্যতাকে কয়েকটা দিনের হৈ–হুল্লোর দিয়ে কিছুটা সহজ করে তোলার প্রচেষ্টা এই আর কি। অবশ্য এই সময় বহু খেটেখাওয়া মানুষের কাছে দুঃখ–দারীদ্র জর্জরিত দিনগুলি আরও ভারী হয়ে কঠিন করে তোলে প্রত্যহের গগন, … এ কথাটিও অস্বীকার করা অসম্ভব।
… তবুও, তবুও এই সব বিভিন্ন জন–উৎসবগুলি পুরোপুরিভবে মুছে দিলে সাধারন মানুষের দিনগুলি সম্পূর্ণভাবে বর্ণহীন, ছন্দহীন এবং ফ্যাকাশে হয়ে উঠবে।
যদিও অনেক কিছু বলার রইল তবুও কথা না বাড়িয়ে আজ এখানেই হোক ইতি।…