• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

বাংলা ব্লগ । Bangla Blog

এভারগ্রীন বাংলা ব্লগ

  • ই-বাংলা
  • লাইব্রেরি
  • হেলথ
  • ইবুক

নদী এবং পানিসম্পদের ওপর সকল আগ্রাসন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলুন

June 23, 2009 by nabalok

[ভারত কর্তৃক টিপাইবাধ নির্মাণের প্রতিবাদে গত ৬ জুন সিলেটের নগর ভবন পয়েন্টে জনসভা ও পরদিন স্থানীয় জাতীয় শিক্ষা কেন্দ্রে মতবিনিময় সভা অনুঠিত হয়। উভয় সভার প্রধান বক্তা বাসদ আহ্বায়ক কমরেড খালেকুজ্জামান যে বক্তব্য রাখেন, সামান্য সম্পাদনা সাপেক্ষে এখানে তা প্রকাশ করা হল ] আজ আমরা একটা অত্যন্ত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য সভা আহ্বান করেছি। সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা নদী রক্ষা তথা লক্ষ কোটি মানুষের বাচা-মরার প্রশ্ন নিয়ে সিলেট-সহ সমগ্র দেশবাসী ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এর উদ্দেশ্য। কিন্তু সকালেই পুলিশ এসে কোনো কথা না শুনে মঞ্চ ভেঙে দেয়। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আগেই অবহিতপত্র দেয়া হয়েছিল এবং তাতে তারা সম্মতিও দিয়েছিলেন। তারপরও পুলিশের এ কা–কীর্তি আমাদের বোধগম্য হয়নি। সরকারের দিনবদলের এটা একটা নমুনা কিনা তাও বোঝা সম্ভব হয়নি। কারণ সরকারের উপর মহলের নির্দেশেই এ কাজ পুলিশ করেছে, নাকি বিগত জোট সরকারের আমলে আস্থাভাজন হতে গিয়ে যে জাতীয়তাবাদী সিল কিছু পুলিশ কর্মকর্তার গায়ে মারা হয়েছিল তা মুছে নব আস্থা স্থাপনের প্রয়াস থেকে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিংবা কোনো মহলের উসকানিতে অতি উৎসাহে ক্ষমতা জাহিরের চেষ্টা থেকে এটা হয়েছে তা নির্ণয় করা সরকার এবং প্রশাসনের দায়িত্ব। তবে কাজটা জঘন্য এবং এ ধরনের স্বেচ্ছাচারী-স্বৈরাচারী আচরণ থেকে নিবৃত্ত থাকার জন্য সরকার এবং প্রশাসনকে এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই সভা থেকে দাবি জানাচ্ছি। একটি জাতি বা জনগোষ্ঠীর সমাজবদ্ধ জীবনপ্রণালী গড়ে ওঠার পেছনে উৎপাদন পদ্ধতি যেমন কাজ করে তেমনি তাদের জৈবিক অস্তিত্ব রক্ষা ও সুস্থ জীবন বিকাশ অনেকটাই নির্ভর করে নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্যের ওপর। অর্থাৎ যে বিশেষ প্রাকৃতিক পরিবেশে একটি জনগোষ্ঠী গড়ে ওঠে তার সামঞ্জস্য ও অসামঞ্জস্যের ওপর তাদের টিকে থাকা না থাকা অনেকটা নির্ভর করে। যে-পরিবেশে বাংলাদেশের মানুষ বেড়ে উঠেছে সে-পরিবেশ আফগানিস্তান, সাইবেরিয়া কিংবা অন্য সর্বত্র নেই। বাংলাদেশের এই ব-দ্বীপ ভূমি জেগে উঠেছে প্রধানত হিমালয় ও অন্যান্য পর্বতমালা থেকে নেমে আসা এবং বৃষ্টি ধোয়া নদী-বাহিত পলি দ্বারা। আর মানুষ লালিত হয়েছে নদী-নালা-খাল-বিল-হাওড়-বাওড়, বন-বাদাড় সমৃদ্ধ পরিবেশ-প্রকৃতির ছায়ায় মায়ায়। নির্মম ধনবাদী শোষণের পরও এই পরিবেশই একটা ক্ষুদ্র ভূমিতে এত বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও স্বাস্থ্য রক্ষা করে চলেছে। যে কারণে নদী আমাদের জীবন ও সংস্কৃতির সাথে অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে। তাই বলা হয়ে থাকে নদীর প্রবাহই বাংলার প্রাণ-প্রবাহ। কিন্তু বাইরের ও ভিতরের হামলার মুখে নদী এবং বাংলাদেশের মানুষের জীবন আজ বিপন্ন দশায় পতিত য়েছে। একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের হৃদয়-জুড়ে প্রবাহিত বারো শত নদ-নদীর নাম পাওয়া যেত। বাংলাদেশের একজন কবি তার কবিতায় ১৩শ� নদীর নাম উল্লেখ করেছেন। এখন তা ২শ� ৫৪টিতে এসে ঠেকেছে। তাও শুষ্ক মৌসুমে ১৭/১৮টির বেশি নদী সচল থাকে না। এখন একে রক্ষা করতে না পারলে আমাদের শেষ-রক্ষা হবে না। বাংলাদেশ ভারত-বেষ্টিত এবং সামান্য কিছু অংশ বার্মার পাশে লেগে আছে। পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম পলিবাহিত ব-দ্বীপ বাংলাদেশ, যা রাক্রমশালী নদী গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা (এইগ) বেসিন বা অববাহিকার সৃষ্টি। এর প্রবাহিত এলাকা প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ বর্গকিলোমিটার যার ৭.৫% বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে গিয়ে সাগরে পড়েছে। বাংলাদেশের চার-পঞ্চমাংশ ভূখ- তৈরি হয়েছে গঙ্গা (পদ্মা)-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা (বরাক) নদী সিস্টেমের মাঝে। এই গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদী ব্যবস্থা ৫টি দেশ যথা ভারত, নেপাল, ভুটান, চীন ও বাংলাদেশ জুড়ে রয়েছে। এই এইগ অববাহিকা অঞ্চল জুড়ে এবং নির্ভর হয়ে পৃথিবীর প্রায় ১০ ভাগ মানুষ বাস করে যদিও তা পৃথিবীর মোট স্থলভূমির মাত্র ১.২ ভাগ। এই পানি সম্পদ আমাদের খাওয়া, গৃহস্থালিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সেচ-এর কাজে লাগানো, সমুদ্রের লোনাপানি প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর রক্ষা করে কৃষি-বন ও আর্সেনিকের মতো বিষক্রিয়া রোধ, নৌ চলাচল, প্রাকৃতিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ও মাছের চাষ করা, পানির দূষিতকরণ রোধ করা, শিল্প-কারখানার জন্য পানি সরবরাহ, হাঁস-মুরগি, গবাদি পশুর খামারের জন্য পানি, বনাঞ্চল ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ নানা প্রয়োজন পূরণ করে। এইভাবে গঙ্গা-ব্রহ্মপু্র-মেঘনা বেসিনের জলপ্রবাহের সাথে আমাদের জীবনপ্রবাহ সম্পর্কিত হয়ে আছে। গঙ্গা (পদ্মা), ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা (বরাক) এই বড় এবং প্রধান ৩টি নদ-নদীসহ ৫৪টি ছোট-মাঝারি নদী ভারত থেকে এবং বার্মা থেকে ৩টি নদী – মোট ৫৭টি আন্তর্জাতিক নদী বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে। এই ৫৪টি নদীর মধ্যে ৪৮টি নদীর পানি প্রবাহকে ভারত একতরফাভাবে নানা প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণ করছে। যেমন গঙ্গা নদী, এর উৎপত্তি হিমালয়ের দক্ষিণ ঢালে ২৩ হাজার ফুট উচ্চতায় গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে। দক্ষিণ পূর্বে ও পূর্ব দিকে প্রায় ১ হাজার মাইল অতিক্রম করে এই নদী পদ্মা নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এই দীর্ঘ পথে ভারত উত্তর প্রদেশ, বিহার ইত্যাদি স্থানে অসংখ্য বাঁধ ও সংযোগ খাল করে সেচের জন্য পানি সরিয়ে নেয়ায় পশ্চিমবঙ্গে ভাগিরথী-হুগলী নদীর পানি প্রবাহ কমে আসে। এটা পূরণ করে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বাড়ানো ও সেচের জল যোগান দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সীমানার ১১ মাইল উজানে মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা নামক স্থানে ফারাক্কা বঁাধ দেয়া হয়। ১৯৫১ সালে ভারত এ পরিকল্পনা করে এবং ১৯৬১ সালে বঁাধের কাজ শুরু হয় এবং ১৯৭৪ সালে তা শেষ হয়। পরীক্ষামূলকভাবে বঁাধ চালুর কথা বলে তারা স্থায়ীভাবে চালু করে দেয়। যার ফলে বাংলাদেশের ৩৭ ভাগ অঞ্চল ও ৩ কোটি মানুষ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এখন আবার মেঘনার উৎসমুখ বরাক নদীতে বঁাধ দিয়ে সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনার ওপর নামিয়ে আনা হচ্ছে নতুন আক্রমণ। ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের ওপর কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক ও সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। সেজন্য ট্রানজিট (বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ভারত থেকে ভারতে যাতায়াত)-এর বিষয়টি বারবার আসছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে আর্থিক-সামরিক সাম্রাজ্য ও আধিপত্য বিস্তারের বিশদ পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। তারই অংশ হিসাবে এবং ভারতীয় একচেটিয়া পঁুজির মুনাফা বাণিজ্য ম্প্রসারণের তাগিদে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহের পানি, তেল, কয়লা ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন, ইস্পাতসহ ভারী শিল্প স্থাপন, বাণিজ্যিক ও পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকা স্থাপন, সামরিক স্থাপনা নির্মাণ ইত্যাদি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও প্রকল্প নিয়ে তারা অগ্রসর হচ্ছে। সাধারণ জনগণের স্বার্থ এতে তেমন না থাকায় টিপাইবঁাধ বিরোধী একটা বড় আন্দোলন মনিপুর-মিজোরাম জুড়ে চলমান রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ-সংগ্রামও একভাবে রয়েছে। বর্তমানে পশ্চিমাঞ্চলে ভারতের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী পকিস্তানের বিপর্যস্ত দশা ভারতকে স্বস্তি দিয়েছে। এখন প্রতিদ্বন্দ্বী চীন। চীনের উত্থান ও চীন-রাশিয়ার মিলিত নব সুপার পাওয়ারকে চতুর্দিক থেকে (মধ্য এশিয়া, পূর্ব-ইউরোপ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান) বেষ্টনি দিয়ে হুমকি এবং ভারসাম্যের মধ্যে রাখার মার্কিনী রণকৌশলের সাথে ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তার কৌশলের কাকতালীয় মিলকেও বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা দরকার। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহকে কেন্দ্র করে এই মহাপরিকল্পনার একটা অংশ হচ্ছে টিপাইমুখে বরাক নদীতে বঁাধ। বরাক নদী পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ব্রহ্মপুত্র-বরাক-মেঘনা বেসিনের অংশ। ব্রহ্মপুত্র নদ তিব্বত থেকে উৎপত্তি হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত গড়িয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে শেষ পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। বরাক নদী উত্তর-পূর্ব ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী প্রবাহ (উৎধরহধমব ংুংঃবস)। এই নদী মনিপুর রাজ্যের সেনাপতি জেলার লাইলিয়াই (খধরষুধর) গ্রাম এর কাছে পার্বত্যভূমি থেকে উৎপত্তি হয়েছে। বরাকের উজান এলাকা মনিপুর রাজ্যের সমগ্র উত্তর, উত্তর পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ পশ্চিম এলাকা জুড়ে রয়েছে। বরাকের মধ্য স্রোত আসাম রাজ্যের সমতল কাছার (ঈধপযধৎ) এলাকা দিয়ে প্রবাহিত। আর নিম্ন প্রবাহ বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সিলেট জেলার জকিগঞ্জে অমলসিদ পয়েন্টে ঢুকে সুরমা-কুশিয়ারায় প্রবাহিত হয়ে ভৈরবে এসে মেঘনায় রূপান্তরিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। মেঘনা নদী প্রায় ৬৫০ মাইল দীর্ঘ। গভীর এবং প্রশস্ত এ নদী দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ নদীও। সুরমা এবং কুশিয়ারা নদী সিলেট জেলা অতিক্রম করে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার সীমান্তে মারকুলীতে এসে কালনি নদী নামে কিছুদূর পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের কাছে পুরনো ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। তার পর দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে চঁাদপুরের কাছে পদ্মার সাথে মিলিত স্রোতধারায় দক্ষিণে নোয়াখালী ও ভোলা দ্বীপের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সু নামগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, ঢাকা জেলার কিছু অংশ, মুন্সিগঞ্জ, চঁাদপুর, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার অংশ বিশেষ নিয়ে মেঘনা তার বিখ্যাত দুটি উপনদী তিতাস ও ডাকাতিয়াসহ বহু শাখা নদীসহ প্রবাহিত হয়েছে। এই নদী বিপুল পরিমাণ বৃষ্টির পানি বহন করে চলে। একে চিরযৌবনা নদী বলা হয় কারণ এর প্রবাহে বড় ধরনের ভাটা কখনো আসেনি। এখন টিপাইবঁাধ একে বার্ধক্য এবং মুমূর্ষ অবস্থার দিকে ঠেলে দেবে যা বাংলাদেশের একটা বিশাল এলাকাকে বিরানভূমিতে পরিণত করবে। বাংলাদেশের অমলশিদ সীমান্ত থেকে ১৯৫ কিলোমিটার উজানে আসাম-মিজোরাম সীমান্তে টিপাইমুখ গ্রামের সন্নিকটে তুইভাই ও বরাক নদীর মিলনস্থলের ৫০০ মিটার নিচে এই বঁাধ নির্মিত হবে। এই বঁাধ ১৫০০ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে নির্মিত হবে। এর উচ্চতা হবে ১৬২.৮ মিটার যা ৫০ তলা বিল্ডিংয়ের সমান উঁচু হবে এবং লম্বা ৩৯০ মিটার অর্থাৎ প্রায় অর্ধকিলোমিটারের কাছাকাছি। ভারতের জল কমিশন ১৯৮৪ সালে প্রথম টিপাইমুখ বঁাধের প্রস্তাব করে। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যাত হয়। তারপর ১৯৯৫ সালে ব্রহ্মপুত্র বোর্ড একটি প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ১৯৯৯ সালে উত্তর-পূর্ব বিদু্যৎ কর্পোরেশন লিমিটেড এর কাছে হস্তান্তর করে। ২০০৩ সালে তা অনুমোদন লাভ করে। ২০০৪ সালের ২৩ নভেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং টিপাইমুখ বঁাধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেন। এক পর্যায়ে তা স্থগিত হয়। তারপর ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে যখন বাংলাদেশের শাসকশ্রেণী জোট-মহাজোটে বিভক্ত হয়ে ঢাকার রাজপথে সহিংস সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হওয়া না হওয়া নিয়ে নানা বিতর্ক, চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলছে তখন ভারতের কেন্দ্রীয় বিদু্যৎমন্ত্রী ও ভারী শিল্পমন্ত্রী বঁাধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১১ সালের মধ্যে এই বঁাধের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করা হবে বলে তারা ঘোষণা করেন। এখানে লক্ষণীয় যে এরশাদের শাসনামল থেকে এ পরিকল্পনা ও নানা উদ্যোগ শুরু হয়। তারপর দীর্ঘ সময় বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পালাক্রমে ক্ষমতাসীন হয়েছে। জামায়াত-জাতীয় পার্টি ক্ষমতার শরীক থেকেছে। একদিকে ভারত যেমন সকল আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও রীতিনীতি ভঙ্গ করে উজানের দেশে একতফাভাবে বঁাধের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেমনি বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীও এ বিষয়ে নির্বিকার থেকেছে। তাদের তেমন কোন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা ২০০৫ সালের ১ ও ২ মার্চ সিলেট-জকিগঞ্জ লংমার্চ করেছি। সেমিনার, মানববন্ধন, সভা-সমাবেশ করে নানাভাবে সরকারসমূহের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি। আরও কিছু সংস্থা ও সংগঠনও এ বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিল। কোনো ফল হয়নি। ভারত সরকারের আন্তঃনদী সংযোগ অর্থাৎ ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে পানি সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনার বিরুদ্ধেও আমরা ২০০৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ ঢাকা-কুড়িগ্রাম লংমার্চ করেছি। এবারও আমরা বর্তমান সরকারের শাসনামল শুরু হওয়া থেকেই সরকারের সতর্ক হওয়ার এবং উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলে আসছি। তারই অংশ হিসাবে সিলেটে এই জনসভা এবং বৃহত্তর সিলেট থেকে সর্বদলীয় উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান। এই বঁাধের কাজ বহু আগেই শুরু হয়ে যেত যদি না মনিপু রের আদিবাসী জনগোষ্ঠীসহ পূর্বাঞ্চলীয় মনিপুর-মিজোরাম রাজ্যের জনগণ এবং নানা স্তরের ভারতীয় বুদ্ধিজীবী বিশেষজ্ঞগণ এর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করতেন। শুরুতে মনিপুর রাজ্য সরকারও এর বিরুদ্ধে ছিল। পরে কংগ্রেস সরকার তাদের বাগে আনতে সমর্থ হয়। তাদের বিরোধিতার কারণ এই ছিল যে বঁাধ নির্মিত হলে মনিপুর রাজ্যের ৩১১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা স্থায়ীভাবে জলমগ্ন হয়ে যাবে। যার মধ্যে আছে ২২৯.১১ বর্গ কি.মি. সংরক্ষিত বনভূমি আর আবাদী কৃষি জমি ও আবাসন এলাকা। এতে জেলিয়াংগ্রং ও হামার আদিবাসীর ৪০/৫০ হাজার লোক উচ্ছেদ হয়ে যাবেন। আমাদের কাপ্তাই বঁাধে যেমন অবস্থা হয়েছিল পার্বত্য আদিবাসীদের। তাছাড়া এই বিশাল বঁাধটি যে অঞ্চলে তৈরি হতে যাচ্ছে তা একটা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ১৯১৮ সালের ৭ মাত্রার রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প সহ ১০০ বছরের ভূকম্পন প্রবণতা থেকে এ ঝুকি উপেক্ষা করার মতো নয়। তাছাড়া আসাম-মনিপুর-মিজোরামের একটা অঞ্চলে বর্ষায় বন্যার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তারা দেখেছেন। বাংলাদেশের দুর্গতি ও চরম সর্বনাশের বিষয়টিও দু�-চারজন বিশেষজ্ঞ বলার চেষ্টা করেছেন। এই বঁাধের উজানে ভাটিতে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে নেতিবাচক

সুত্র:বাংলা অনলাইন

Category: ব্লগ

About nabalok

Previous Post:ভাবের জলে সাঁতার দিলে কিসের ভাল-মন্দ
Next Post:খালিদ হাসান মিলুর আহত হৃদয়

eBangla.org