নাহ, লেখার টাইটেলটা ভুল নয়…আরে জানি জানি এটা ১৪০০ সন নয়…হ্যাঁ ১৪১৪। তবে ১৪০০ কেন? সেই কথাইতো বলছি।
বঙ্গাব্দ ১৪০০। ফিডব্যাকের এ অ্যালবামের সাথে তখনো পরিচয় হয় নি। পরিচয় হয়েছিল একটি সুন্দর সকালের সঙ্গে। বর্ষাকাল এলেই বাড়ির একদিকটায় ফুলের বাগান করার ঝোঁক অনেকেরই কমবেশি থাকে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বাড়ির আশেপাশে যদি একটু ফাঁকা জায়গা পাওয়া যায়। আর ব্যাপারটাও সহজ কেননা এসময় পছন্দমত ফুলের চারা বা ডাল ভেঙ্গে মাটিতে পুঁতে দিলেই ঝামেলা শেষ। চর্চা করার বালাই নেই। কয়েকদিনের মধ্যেই দেখা যায় গাছ বাড়তে শুরু করেছে। তো এমন একটা সময়েই বড়দের দেখাদেখি গ্রামের কারো বাড়ি থেকে একটা গন্ধরাজ ফুলের ডাল ভেঙ্গে বাড়ির বাগানটার একপাশে পুঁতে রেখে দিলাম। বাগানে আমার প্রথম অবদান।
দিন যায়। বাগানে আর সবার গাছগুলো তরতর করে বেড়ে উঠছে। দিন যায়। সবার গাছে ফুলও ফুটটে শুরু করেছে। এদিকে আমারটাতে কোন প্রকার লক্ষন দেখা যাচ্ছে না। ফুলতো দুরের কথা, কোন পাতা পর্যন্ত নেই। শুধু একটা ডাল, মরা ডালের মত। সবাই বলছে মরে গেছে, ফেলে দিতে। আলসেমি করে ওটা আর তুলে ফেলা হয়নি। আমিও অনেকটা বোধ হয় ভুলেই গিয়েছিলাম।
পহেলা বৈশাখ, ১৪০০ সন। বাড়িতে অনেক অনুষ্ঠান, অনেক আয়োজন। সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। অনেক লোকজন কাজ করছে। আমার কিছু করার নেই। ঘুম থেকে উঠে এদিন-সেদিক ঘুরছিলাম। বাগানের দিকটায় গিয়ে থকমে গেলাম। এক অদ্ভুত ভালোলাগা নিয়ে অনেকক্ষণ স্তব্ধ হয়ে রইলাম। ফুলের ডালটাতে কোন পাতা নেই। একটু বড় হয়েছে বলেও মনে হল না। শুধু মাথায় একটা বৃহদাকার মুক্তার মত একটি গন্ধরাজ ফুটে রয়েছে। আমার জীবনে পহেলা বৈশাখ এখান থেকেই শুরু।
বাড়িতে অনেক লোকজন হবে। কে না কে নিয়ে যায়। তাই ফুলটা তুলে রেখেছিলাম। খুঁজলে হয়তো পুরাতন কোন বইয়ের মধ্যে পাওয়া যাবে। কি জন্য!
[গাছটাতে আর কোনদিন ফুল ফোটেনি। ফুটবে কি করে। ঐ দিনের পর থেকে তো ওটাকে আর দেখিইনি। পরিষ্কার করার সময় কেউ হয়তো ফেলে দিয়ে থাকবে।]