কাশিম পুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে ভত্তি হলাম । আমার এক ফুফাতো ভাই ঐ বিদ্যাল্রয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন । আমার ছন্নছাড়া বাউন্ডেলে জীবনের কথা শুনে দয়া করে উনি আমাকে বিদ্যালয়ে ভত্তি
এবং থাকা খাওয়ার জন্য একটা লজিং ঠিক করে দিলেন ।
যশোর শহরের নিকটবর্ত্তি কনেজপুর গ্রামে লজিং ঠিক হল। ছাত্র হিসাবে
পেলাম ৫ম শ্রেনীতে অধ্যায়ন রত শরিফুল এবং ওর ছোট ভাই
মোঃ আলি হোসেনকে।
লজিং বাড়ি যেয়ে ওদের নুতন পরিবেশের সংঙে খাপ খাওয়াতে বেশ
কষ্ট হয়েছে । কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই তাদের পরিবারের সংঙে এমন ভাবে মিশে গিয়ে ছিলাম যে, বাইরের কোন লোক ঐ বাড়িতে এলে সে বুঝতেই পারতো না আমি বাহিরের না ওদের পরিবারের লোক । লজিং সম্পর্কে আমার ভাগ্য সু-প্রসন্নই বলতে হবে । আমি গেলাম লজিং মাষ্টার হয়ে কিন্তু দুই এক দিন যেতে না যেতেই আমি ওদের পরিবারের একজন হয়ে গেলাম এমন ভাগ্য কয়জনের হয় ।
লজিং বাড়ি এক বছর ছিলাম সেই এক বছরের স্মৃতি আমার জীবনে অক্ষয় হয়ে থাকবে । কোন দিনই ভুলতে পারবো না ভুলা সম্ভব নয় ।
লজিং বাড়ীর বসবার ঘরের সামনে অনেক জায়গা, বাড়ির সিমানা শেষে একটা রাস্তা , রাস্তার ওপারে একটা পুকুর , পুকুরের দক্ষিন পাশে
মোল্লা বাড়ী । ঐ মোল্লা বাড়ীর একঠা ছেলে আমার সংঙে পড়তো তার নাম শাজাহান । সহপাঠিদের মধ্যে ওর সংঙেই আমার চলা ফেরা উঠা বসা বেশী ছিল এবং ওদের বাড়ীতে ছিল আমার অবাধ যাতায়াত।
শাজাহানের বিধবা এক বড় বোন ছিল মেট্রিক পাশ করার সংঙে সংঙেই উনার বিয়ে হয়েছিল । কিন্তু দুঃভাগ্য স্বামী সুখ বেশী দিন তার কপালে সইল না । বিবাহের অল্প কিচুদিন পরই স্বামীকে সাদা বসনে আবৃত করে শেষ বিদায় জানিয়ে বাবার বাড়ী চলে এসেছিল, তাও অনেক দিন আমার সংঙে পরিচয় হওয়ার আরো দুই বছর আগে । আমি তাকে আপা বলে ডাকতাম , সে আমার নাম ধরে ডাকত ।
চলবে ।