“উন্নয়নশীল দেশে ক্লোনিং পরিবেশগত সুবিধা বয়ে আনতে পারে” বলেছেন অধ্যাপক ক্যালটাস জুমা। তিনি যুক্তি দেখানে যে বায়োটেকনলজির মাধ্যমে কৃষি কাজে ব্যবহারযোগ্য দুর্লভ পশুর উৎপাদন করা সম্ভব যেগুলি পরিবর্তিত পরিবেশে অধিকতর অভিযোজন করতে সক্ষম”
গত পাঁচ বছর গবেষণার পর আমেরিকার খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (Food and Drug Administration, FDA) ঘোষণা দিয়েছে যে ক্লোনিং পদ্ধতিতে উৎপাদিত পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে নিরাপদ। কিন্তু তার পরও কিছু ভোক্তা সংগঠন এব্যাপারে পুরোপুরি সন্দেহ মুক্ত হতে পারেনি এবং তারা ক্লোনিংএর নীতিগত দিকগুলি পরীক্ষা করে দেখার দাবি জানিয়েছে।
যদিও তাদের দাবি সঙ্গত, কিন্তু এর সাথে ক্লোনিংএর পরিবেশগত সুবিধার বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখতে হবে, বিশেষত: উন্নয়নশীল দেশের এর প্রভাবের কথা বিবেচনা করে।
উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, জলবায়ুর পরিবর্তন পরিবেশের উপর সম্ভাব্য যতখানি প্রভাব ফেলবে তারচে বেশী প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল দেশের গবাদিপশুর উপর। বিশেষত: আফ্রিকার অনেক উন্নয়নশীল দেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এই বিপর্যয় সামলানোর জন্য দরকার হবে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তার জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগ। এসব প্রযুক্তির মধ্যে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার ও সংরক্ষণের জন্য গবাদি পশুর ক্লোনিং অন্যতম।
জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের (Food and Agricultural Organization, FAO) হিসাব অনুযায়ি প্রায় ১৫০০ বা মোট গবাদিপশু প্রজাতির ৩০ভাগই আজ বিলুপ্তির হুমকির সম্মুখিন। এদের অধিকাংশই উন্নয়নশীল দেশের। বর্তমানে এসবের ১শ’র ও কম প্রজাতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাস্তুগত বিপর্যয় এই গতিকে ত্বরান্বিত করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিলুপ্তির গতি ধীর করার জন্য দরকার প্রজননের আধুনিক কৌশল, যেমন, ক্লোনিং। এর ফলে যেসব গবাদি পশুর সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কমে গিয়েছে বা বিলুপ্তির পথে তাদের সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
প্রজাতির সংরক্ষণের মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের এই বিপর্যয়ের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার ফলে ক্লোনিং অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করতে পারে। উন্নত প্রজাতির গবাদি পশু থেকে অধিকতর দুধ, মাংস পাওয়া সম্ভব যা সাধারণ মানের পশু থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। এসবের ফলে সামগ্রিক পরিবেশের উপর ফলদায়ক (ধনাত্বক) প্রভাব পড়বে।
গবেষকগণ ইতোমধ্যেই সংরক্ষণের (conservation) কাজে ক্লোনিং এর ব্যবহার শুরু করেছেন। উদাহরনস্বরুপ, ২০০৪ সালে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা ১ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৭ কোটি টাকা) একটি গবেষণা প্রকল্প ঘোষণা করে। এ প্রকল্পের আওতায় ক্লোনিং এর মাধ্যমে বিপন্নপ্রায় ভারতীয় সিংহ সংরক্ষণ করা হবে। এই সিংহ বর্তমানে ৩শ’র ও কম আছে বলে অনুমান করা হয়। তেমনিভাবে অন্যান্য বিপন্ন প্রাণি যেমন মাছ, সরিসৃপ, উভচর প্রাণিদেরও সংক্ষণ করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞানীগণ আশাবাদি যে ক্লোনিংএর মাধ্যমে ভিয়েতনামের বিলুপ্তপ্রায় সাওলা (Pseudoryx nghetinhensis), গাউর (Bos javanicus) এবং ওয়াইল্ড ওয়াটার বাফেলো (Bubalus arnee) ইত্যাদি প্রজাতি বাঁচানো সম্ভব।
ভোক্তা সংগঠনগুলো অবশ্য ক্লোনিং এর নীতিগত দিক এবং ক্লোন করা পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের সঙ্গত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উন্নয়নশীল দেশের প্রেক্ষাপটে এসব দাবির প্রয়োজনীয়তা এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রমান সাপেক্ষে তাদের দাবিগুলো বিচার করা প্রয়োজন।
ক্লোন করা পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে নিরাপদ কি না সেটির কথাই ধরা যাক। বিখ্যাত জার্নাল Theriogenology তে ক্লোন করা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এর পুষ্টি গুনাগুন বিচার করে কয়েক পর্বের প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে। দেখা যায়, জার্ণালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বক্তব্য এবং FDA-প্রকাশিত তথ্যের মূল বক্তব্য একই। অর্থাৎ ক্লোন করা পশুর মাংস খাবার হিসেবে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। এছাড়া ফ্রান্সের জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণা করে জানতে পেরেছে ক্লোন করা পশুর মাংস ও দুধ আর স্বাভাবিক পশুর মাংস ও দুধের মধ্যে গুনগত কোন পার্থক্য নেই। জাপানের কাগোশিমা গবাদিপশু প্রজনন ইনস্টিটিউট এবং আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকাট এক যৌথ গবেষণায় ক্লোন করা পশুর মাংস আর স্বাভাবিক প্রজননের মাধ্যমে জন্মানো পশুর মাংসের মধ্যে কোন পার্থক্য করতে পারেনি। তাই এটা বলা যায় ক্লোন করা পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে নিরাপদ।
জাপানের ইনস্টিটিউট ফর এ্যনিম্যাল সাইন্স ইন বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড টক্সোকোলজি ইদুরের উপর এক গবেষণা করেছে। এতে ইঁদুরকে ক্লোন পশুর মাংস ও দুধ খাওয়ানো হয় এবং অপর কিছু ইঁদুরকে স্বাভাবিক পশুর মাংস ও দুধ খাওয়ানো হয়। এর পর এসব ইঁদুরের মূত্র পরীক্ষা করা হয় কোন পার্থক্য আছে কি না তা দেখার জন্য। পরীক্ষায় ইঁদুরগুলোর মধ্যে কোন পার্থক্য ধরা পড়েনি।
তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। আমেরিকান ও ব্রাজিলিয়ান বিজ্ঞানীরা আর্জেন্টিনায় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখেছেন ক্লোন করা পশুর জীবনচক্রে স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু ক্লোন পশুর স্বাস্থ্যগত সমস্যা মানুষের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারেন কি-না এই গবেষণায় তা বলা হয়নি।
প্রাণিজগতের কল্যাণ ও এর উন্নয়ন সাধন মানুষের প্রয়োজনেই গুরুত্বপূর্ণ। বৈজ্ঞানিক সমাজের উচিৎ প্রাণিবিদদের সাথে নিয়ে তাদের গবেষণা কার্য পরিচালনা করা।
নীতিগত বিড়ম্বনা
উন্নয়নশীল দেশে ক্লোনিংএর প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি সেসব দেশে এটা গ্রহনযোগ্য হবে কী না তার নীতিগত দিকটা আলোচ্য থেকেই যাচ্ছে। ক্লোনিং স্বাভাবিক প্রজননের চাইতে অনেক বেশী ব্যয় সাপেক্ষ। এক একটি ক্লোন করতে খরচ সর্বোচ্চ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা। যদিও ক্লোনিংএর ফলে অর্থনৈতিক লাভের পরিমান এ প্রযু্ক্তি গ্রহণের খরচের চেয়ে অনেক বেশী, বিশ্বের অধিকাংশ দেশের গরিব কৃষকরাই পশু ক্লোন করার খরচ বহন করতে পারবে না। এর প্রধান কারণ সেসব দেশের প্রযুক্তিগত পশ্চাদপদতা এবং ক্লোন পদ্ধতি প্রয়োগ করার মত যোগ্য প্রযুক্তিবিদের অভাব।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য উন্নত দেশের সাথে উন্নয়নশীল দেশের গবেষণা চুক্তি করা যেতে পারে। ফলে ক্লোন প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশে হস্তান্তর যেমন সহজ হবে তেমনি ক্লোন পশু খাদ্য হিসেবেও গ্রহনযোগ্যতা পাবে। উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশে হস্তান্তের মাধ্যমে তারা একদিকে মান সম্পন্ন ডেইরী পণ্য প্রস্তুত করার সুযোগ পাবে, অন্যদিকে বিপন্ন প্রজাতির সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখবে।
মূল নিবন্ধ: ক্যালটাস জুমা (Calestous Juma)“উন্নয়নশীল দেশে ক্লোনিং পরিবেশগত সুবিধা বয়ে আনতে পারে” বলেছেন অধ্যাপক ক্যালটাস জুমা। তিনি যুক্তি দেখানে যে বায়োটেকনলজির মাধ্যমে কৃষি কাজে ব্যবহারযোগ্য দুর্লভ পশুর উৎপাদন করা সম্ভব যেগুলি পরিবর্তিত পরিবেশে অধিকতর অভিযোজন করতে সক্ষম”
গত পাঁচ বছর গবেষণার পর আমেরিকার খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (Food and Drug Administration, FDA) ঘোষণা দিয়েছে যে ক্লোনিং পদ্ধতিতে উৎপাদিত পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে নিরাপদ। কিন্তু তার পরও কিছু ভোক্তা সংগঠন এব্যাপারে পুরোপুরি সন্দেহ মুক্ত হতে পারেনি এবং তারা ক্লোনিংএর নীতিগত দিকগুলি পরীক্ষা করে দেখার দাবি জানিয়েছে।
যদিও তাদের দাবি সঙ্গত, কিন্তু এর সাথে ক্লোনিংএর পরিবেশগত সুবিধার বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখতে হবে, বিশেষত: উন্নয়নশীল দেশের এর প্রভাবের কথা বিবেচনা করে।
উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, জলবায়ুর পরিবর্তন পরিবেশের উপর সম্ভাব্য যতখানি প্রভাব ফেলবে তারচে বেশী প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল দেশের গবাদিপশুর উপর। বিশেষত: আফ্রিকার অনেক উন্নয়নশীল দেশ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এই বিপর্যয় সামলানোর জন্য দরকার হবে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং তার জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগ। এসব প্রযুক্তির মধ্যে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার ও সংরক্ষণের জন্য গবাদি পশুর ক্লোনিং অন্যতম।
জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংগঠনের (Food and Agricultural Organization, FAO) হিসাব অনুযায়ি প্রায় ১৫০০ বা মোট গবাদিপশু প্রজাতির ৩০ভাগই আজ বিলুপ্তির হুমকির সম্মুখিন। এদের অধিকাংশই উন্নয়নশীল দেশের। বর্তমানে এসবের ১শ’র ও কম প্রজাতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাস্তুগত বিপর্যয় এই গতিকে ত্বরান্বিত করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিলুপ্তির গতি ধীর করার জন্য দরকার প্রজননের আধুনিক কৌশল, যেমন, ক্লোনিং। এর ফলে যেসব গবাদি পশুর সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কমে গিয়েছে বা বিলুপ্তির পথে তাদের সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
প্রজাতির সংরক্ষণের মাধ্যমে বাস্তুতন্ত্রের এই বিপর্যয়ের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার ফলে ক্লোনিং অর্থনৈতিক স্থিতি নিশ্চিত করতে পারে। উন্নত প্রজাতির গবাদি পশু থেকে অধিকতর দুধ, মাংস পাওয়া সম্ভব যা সাধারণ মানের পশু থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। এসবের ফলে সামগ্রিক পরিবেশের উপর ফলদায়ক (ধনাত্বক) প্রভাব পড়বে।
গবেষকগণ ইতোমধ্যেই সংরক্ষণের (conservation) কাজে ক্লোনিং এর ব্যবহার শুরু করেছেন। উদাহরনস্বরুপ, ২০০৪ সালে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা ১ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ৭ কোটি টাকা) একটি গবেষণা প্রকল্প ঘোষণা করে। এ প্রকল্পের আওতায় ক্লোনিং এর মাধ্যমে বিপন্নপ্রায় ভারতীয় সিংহ সংরক্ষণ করা হবে। এই সিংহ বর্তমানে ৩শ’র ও কম আছে বলে অনুমান করা হয়। তেমনিভাবে অন্যান্য বিপন্ন প্রাণি যেমন মাছ, সরিসৃপ, উভচর প্রাণিদেরও সংক্ষণ করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞানীগণ আশাবাদি যে ক্লোনিংএর মাধ্যমে ভিয়েতনামের বিলুপ্তপ্রায় সাওলা (Pseudoryx nghetinhensis), গাউর (Bos javanicus) এবং ওয়াইল্ড ওয়াটার বাফেলো (Bubalus arnee) ইত্যাদি প্রজাতি বাঁচানো সম্ভব।
ভোক্তা সংগঠনগুলো অবশ্য ক্লোনিং এর নীতিগত দিক এবং ক্লোন করা পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের সঙ্গত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উন্নয়নশীল দেশের প্রেক্ষাপটে এসব দাবির প্রয়োজনীয়তা এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রমান সাপেক্ষে তাদের দাবিগুলো বিচার করা প্রয়োজন।
ক্লোন করা পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে নিরাপদ কি না সেটির কথাই ধরা যাক। বিখ্যাত জার্নাল Theriogenology তে ক্লোন করা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এর পুষ্টি গুনাগুন বিচার করে কয়েক পর্বের প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে। দেখা যায়, জার্ণালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বক্তব্য এবং FDA-প্রকাশিত তথ্যের মূল বক্তব্য একই। অর্থাৎ ক্লোন করা পশুর মাংস খাবার হিসেবে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। এছাড়া ফ্রান্সের জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গবেষণা করে জানতে পেরেছে ক্লোন করা পশুর মাংস ও দুধ আর স্বাভাবিক পশুর মাংস ও দুধের মধ্যে গুনগত কোন পার্থক্য নেই। জাপানের কাগোশিমা গবাদিপশু প্রজনন ইনস্টিটিউট এবং আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকাট এক যৌথ গবেষণায় ক্লোন করা পশুর মাংস আর স্বাভাবিক প্রজননের মাধ্যমে জন্মানো পশুর মাংসের মধ্যে কোন পার্থক্য করতে পারেনি। তাই এটা বলা যায় ক্লোন করা পশুর মাংস খাদ্য হিসেবে নিরাপদ।
জাপানের ইনস্টিটিউট ফর এ্যনিম্যাল সাইন্স ইন বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড টক্সোকোলজি ইদুরের উপর এক গবেষণা করেছে। এতে ইঁদুরকে ক্লোন পশুর মাংস ও দুধ খাওয়ানো হয় এবং অপর কিছু ইঁদুরকে স্বাভাবিক পশুর মাংস ও দুধ খাওয়ানো হয়। এর পর এসব ইঁদুরের মূত্র পরীক্ষা করা হয় কোন পার্থক্য আছে কি না তা দেখার জন্য। পরীক্ষায় ইঁদুরগুলোর মধ্যে কোন পার্থক্য ধরা পড়েনি।
তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। আমেরিকান ও ব্রাজিলিয়ান বিজ্ঞানীরা আর্জেন্টিনায় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখেছেন ক্লোন করা পশুর জীবনচক্রে স্বাস্থ্যগত কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু ক্লোন পশুর স্বাস্থ্যগত সমস্যা মানুষের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারেন কি-না এই গবেষণায় তা বলা হয়নি।
প্রাণিজগতের কল্যাণ ও এর উন্নয়ন সাধন মানুষের প্রয়োজনেই গুরুত্বপূর্ণ। বৈজ্ঞানিক সমাজের উচিৎ প্রাণিবিদদের সাথে নিয়ে তাদের গবেষণা কার্য পরিচালনা করা।
নীতিগত বিড়ম্বনা
উন্নয়নশীল দেশে ক্লোনিংএর প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি সেসব দেশে এটা গ্রহনযোগ্য হবে কী না তার নীতিগত দিকটা আলোচ্য থেকেই যাচ্ছে। ক্লোনিং স্বাভাবিক প্রজননের চাইতে অনেক বেশী ব্যয় সাপেক্ষ। এক একটি ক্লোন করতে খরচ সর্বোচ্চ ২০ হাজার ডলার বা প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা। যদিও ক্লোনিংএর ফলে অর্থনৈতিক লাভের পরিমান এ প্রযু্ক্তি গ্রহণের খরচের চেয়ে অনেক বেশী, বিশ্বের অধিকাংশ দেশের গরিব কৃষকরাই পশু ক্লোন করার খরচ বহন করতে পারবে না। এর প্রধান কারণ সেসব দেশের প্রযুক্তিগত পশ্চাদপদতা এবং ক্লোন পদ্ধতি প্রয়োগ করার মত যোগ্য প্রযুক্তিবিদের অভাব।
এই সমস্যার সমাধানের জন্য উন্নত দেশের সাথে উন্নয়নশীল দেশের গবেষণা চুক্তি করা যেতে পারে। ফলে ক্লোন প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশে হস্তান্তর যেমন সহজ হবে তেমনি ক্লোন পশু খাদ্য হিসেবেও গ্রহনযোগ্যতা পাবে। উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশে হস্তান্তের মাধ্যমে তারা একদিকে মান সম্পন্ন ডেইরী পণ্য প্রস্তুত করার সুযোগ পাবে, অন্যদিকে বিপন্ন প্রজাতির সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখবে।
মূল নিবন্ধ: ক্যালটাস জুমা (Calestous Juma)