আমি একজন ডাইলখোর। ডাইল বুঝলেন তো? আরে ঐ যে PHENSEDYL – সংক্ষেপে ডাইল। আহ হা রে! কী সোয়াদ!
কেয়ার টেকার সরকার আইসা দুর্নীতি সুনীতি এইগুলা নিয়া গুতাগুতি শুরু করায় ভাবছিলাম যাউক, মাল টাল পাইতে কোন সমস্যা অইবোনা বোধহয়। কিন্তু হা হতোস্মি!! কে যে বুদ্ধি দিছে ওনাগোরে – লাগছে এখন মালের পিছে। আরে বাংলার যুবসমাজ তো এই একটা জিনিস খাইয়াই বাইচা আছে। এইটা লইয়াও যতি আপনেরা এমুন করেন তাইলে এই যে দৈনিক কোটি খানেক টাকার ব্যবসা অইতাছে, মানে মানি রোলিং করতাছে, তার মানে অইলো গিয়া দেশের অর্খনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাধিত অইতাছে – এইডা তো বন্ধ অইয়া যাইবো। অতোগুলান টাকা আর কোন সেক্টরে রোল করে ডেইলি কন তো? (দেশে আনুমানিক দেড় লাখ মাদকসেবী আছে যাদের আনুমানিক ২৫% ডাইল খায়। প্রতিদিন প্রত্যেকে গড়ে আধা বোতল কইরা খায় ধরলেও এই বিশাল সংখ্যা পাওয়া যায়। প্রকৃত সংখ্যাটা আরো অনেক বেশী হওয়ার কথা)।
কয়দিন ধইরাই তো মাল যোগাড় করতে খুব কষ্ট করা লাগতাছে। দামও বাড়তাছে পাল্লা দিয়া। এমনেই মাইনসের পকেটে টাকা নাই, জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী, এর মইধ্যে আবার মালের বাজার চড়া। কী যে ছিরিঙ্খলার মইধ্যে পইড়া গেলাম!
অমানুষ মাইনে Noman মাইনে ঐ হালার পুত নোমাইন্যা চান্স লইবার লাগছে এর মইধ্যে। বেলায় বেলায় হালার পুতরে মোবাইয়া আনন লাগে, মালের দামের লগে রিক্সাভাড়া, আবর ঝুকিভাতা হিসাবে আরো পঞ্চাশ, হিসাব করেন একটা মালের দাম কতো পড়লো? ৫৫০ + ৪০ + ৫০ = ৬৪০ টাকা! তিনডার কমে তো ভাই দিনটা কাটে না। শইলডা মোচড়ায়, ঝিম ঝিম লাগে, মাথা ব্যথা করে, মেজাজ খারাপ অয় – আরো যে কত কিসিমের যন্ত্রণা।
এর মধ্যে আবার বাংলার পুলিশ ভাইরা মোড়ে মোড়ে চেকপোষ্ট বহাইয়া নোমাইন্যারে আরো চান্স কইরা দিছে। অক্ষণে একটা মালের দাম পড়তাছে গিয়া ৭০০ টাকা (অতিরিক্ত ঝুকিভাতা সহ)। আমার পিছে তো আখাম্বা যাইতেই আছে, সরকারের লসও তো কম না। লাভ খালি ঐ হালার নোমাইন্যার বস এগো। বর্ডারে হালারা একটা মাল কিনে ১৮০ থেইক্যা ১৯০ টাকায়। ও গো জবানীতে “ঘাটে ঘাটে ট্যাকা দিয়া ঢাকায় ঢুকনের সময় কমসে কম চাইরশ পড়ে (ডাহা মিছা কথা। অরাতো মাল আনে পাব্লিক ট্রান্সপোর্টে, শতকরা দুই তিনটা চালান ধরা পড়ে। ঐটুক লস মাইনা নিলেও কোনমতেই খরচা তিনশর উপরে যায় না।) কেরিয়াররে দেওন লাগে ৫০ টাকা। আর এত্তো রিস্কের ব্যবসা কইরা কয়ডা টাকা লাভ না পাইলে বস আমরা চলুম ক্যামনে? থানায় মানায় দিয়া থুইয়া বস আমগো ৫০ টাকার বেশি টিকেনা।”
যাউকগা যা কইবার লাগছিলাম। সরকার যদি এই ডাইল মাইল আরো যা যা আছে এইগুলানরে বৈধ কইরা দিয়া ২% ট্যাক্স আর ৩% ভ্যাট ও বওয়াইতো, তাইলে সরকারের লগে লগে আমগো ও কিছু লাভ অইতো। ক্যামনে? দেখেন তাইলে –
১৯০ টাকার মালের উপরে ২%ট্যাক্স আর ৩% ভ্যাট ধরলে একটা মালের দাম অয় ধরেন ২০০ টাকা যার মধ্যে সরকার পায় ১০ টাকা। দিনে সারাদেশে দৈনিক বিক্রির উপরে সরকারের ইনকাম অইবো প্রায় দুই লাখ টাকা। মানে কিনা বছরে সাড়ে সাতকোটি টাকার টার্ণওভার। আর আমাগো লাভ? একটা মালের লাইগা সবসুদ্ধা কেবল খরচ পড়বো এই ধরেন গিয়া আড়াইশ টাকা। প্রতি মালে সেইভ অইলো কতো? পাচশ টাকা। আর আমাগো সেইভ মানে তো দেশের টাকা দেশেই থাকলো, মানে সরকারের সেইভ অইবো আরো দৈনিক কমসে কম এক কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা।
হালার সরকারের ভিতরে বইয়া অতো জ্ঞানী ব্যক্তিরা যে ক্যান এই সব নিয়া না ভাইবা খালি খালি ভেজাল করে? আবর দেহেন করে কী? সারা বছরে দুই তিন বার হাজার হাজার বোতল রোলারের নিচে ফালায়া ভাইঙ্গা ফালায়। ক্যান রে ভাই, ঐ মালগুলা গার্মেন্টসের ঝুটের মতো রিডাকশন প্রাইসে খোরগরে দিয়া দিলেওতো হয়। খামাখা এই অপচয় করা লাগেনা। কবে যে এই সব সিস্টেম লস বন্ধ অইবো?