• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

বাংলা ব্লগ । Bangla Blog

এভারগ্রীন বাংলা ব্লগ

  • ই-বাংলা
  • লাইব্রেরি
  • হেলথ
  • ইবুক

অসমসাহসী

July 16, 2008 by kobiabdul

বাবলা টেইকওয়েতে কাজ করে। প্রতিদিনের মত আজো কাজে এসেছে দেরি করে। তার কাজই হল বসকে রাগানো। সে এখানে আর কাজ করতে চায়না। সে চায় ২০ তলায় চাকুরি করতে। দারোয়ান সালাম করবে। মাস শেষে বেতনের সাথে বনাস পাবে। কিন্তু তা আর হয়না। এখনকার বস রাগ করলে কিছু বলেনা। শুধু সপ্তা শেষে বেতন কমায়। আজ বাবলার মাথা গরম। কাজে আসতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়েছে। মানে ১০ পাউন্ড গেছে। কি আর করা। দেরি হয়েছে এখন আর মাথা চাপড়ালেও কাজ হবেনা। প্রবেশ করে বসকে দেখে কান্নার ভান করে বলল, ‘বস, মাঝপথে বাস নষ্ট হয় গিয়েছিল। তাই দেরি হয়েছে।’বস ম্লান হেসে বলল, ‘এখন চা খা। পরে চিন্তা ভাবনা করব।’বাবলা বুঝে গেল দশ পাউন্ড গেছে সাথে আক্কেলসেলামী যাহাতে দিতে না হয় সে জন্য দৌড়ে চা’র পানি জ্বালে বসিয়ে বলল, ‘বস, ভাবী কেমন আছেন?’বস রাগ করে বলল, ‘ভাবীর চিন্তা ভুলে  ব্যবসার চিন্তা কর।’বাবলা মাথা নেড়ে চা বানিয়ে বসকে দিয়ে চিন্তাভাবনা করেছে কি করবে। এমন সময় একটা অর্ডার এল। রাতটা খুব ঠাণ্ডা ছিল। লোকজন তেমন বাইরে নেই। বিড়ি টানার জন্য বাবলা বেরিয়ে এসে গাড়ির পাশে বসে চাকা দেখছিল। গাড়ির নিচে কিছু দেখতে পেয়ে ভালো করে তাকিয়ে দেখে গুটিসুটি মেরে একটা ধেড়ে ইঁদুর বসে আছে। ইঁদুর দেখে বাবলা সট্ করে দাঁড়াল। মনে মনে কথা বলছে। Health inspector এসে ইঁদুরটাকে দেখলে সর্বনাশ হবে। টেইকওয়ে বন্ধ করে ফেলবে। চারিপাশে তাকিয়ে দেখে লোকজন নেই। দৌড়ে একটা লাঠি নিয়ে এসে ইঁদুরটাকে তাড়াবার জন্য আস্তে করে খোঁচা দিল। ইঁদুর নড়ছেনা। এবার আস্তে করে ইঁদুরের মাথা বাড়ি দিল। মাগো! ইঁদুরটা গুণ্ডার মত মাথা তোলে চোখপাকিয়ে বাবলার পানে তাকাল। ইঁদুর অত রাগান্বিত হয়েছে যে চোখ দিয়ে যেন আগুন বেরুচ্ছে। বাবলাও দণ্ডনায়কের মত দাঁতে দাঁত পিষে বলল, ‘দাঁড়া! তোকে নাস্তানাবুদ করছি।’ বলে যেমনি আরেকটু জোরে বাড়ি দেবে ওমনি ইঁদুর ঘোঁত করে উঠে কোঁদা দিতেই বাবলা লাফ দিয়ে উঠে চিঁক দিয়ে বলল, ‘বস! আমাকে বাঁচাও। ইঁদুর আমাকে দৌড়াচ্ছে’।তার চিঁক শুনে কেউ আসেনি, সবাই ব্যস্ত। পিছু হেটে মাথা কাত করে তাকিয়ে দেখে ইঁদুর নড়ছেনা। সট্ করে টেইকওয়ের দরজা বন্ধ করে পকেট থেকে চাবি বার করে হাতে থুথু দিয়ে মলে লাঠিটা হাতে নিতেই ইঁদুরটা হিংস্র হুংকার ছেড়ে তেড়ে এগুল। ইঁদুরকে তেড়ে আসতে দেখে লাঠি ফেলে বাবলা দিল দৌড়। বস বেরিয়ে বাবলাকে ডাকছে, ‘এই বাবলা! অর্ডার রেডি হয়েছে। যা ডেলিভারি দিয়ে আয়।’বাবলার সাড়া শব্দ নেই। এবার বস রাগ করে হাঁক দিল, ‘বাবলা! খাবার ঠাণ্ডা হচ্ছেত।’ ‘বস আমাকে বাঁচাও।’ বাবলা হাঁফাতে হাঁফাতে বলল।‘তোর কি হয়েছ ঘোড়ার মত হাঁফাচ্ছিস কেন?’ বস রাগ করে বলল।‘বস একটা হেই মোটা ইঁদুর আমাকে মারতে চেয়েছিল। দৌড়ে জান বাঁচিয়েছি। না দৌড়ালে থোড়া সামান্যের জন্য আজ আমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলত’। বলে বাবলা শিউরে উঠল।‘কি বকবক করছিস? যা ডেলিভারি দিয়ে আয়!’ বলে বস খাবারের ব্যাগ তার হাতে দিল।‘বস আমি পারবনা। আপনি যান। আমি রান্না করব।’ বলে বাবলা মাথা কাত করে গাড়ির নিচে তাকাল।বস দাঁত কটমট করে বলল, ‘কি দেখছিস!’‘ইঁদুর।’ বলে বাবলা চোখ বুজে শিউরে উঠল।‘বাবলা, খাবার ঠাণ্ডা হয়ে যাবেত। দ্রুত যা।’ বস গম্ভীর স্বরে বলল।‘আচ্ছা বস যাচ্ছি’। বলে ব্যাগ হাতে নিয়ে যেমনি বেরুবে ওমনি আগেরটার চেয়ে আরো বড় একটা ইঁদুর তার পথরোধ করল।ইঁদুরটা কম হলেও ছোট মেকুরের মত বড়। বাবলা পিছুহটলে বস দমক দিল, ‘কি হল! পিছু হাঁটছিস কেন?’‘বস, আগেরটার দাদা এসেছে।’ বলে বাবলা বসের পাশে এল।ছোট্ট ইঁদুর ভেবে বস এফরন কোমরে গুঁজে চোখ পাকিয়ে অধরদংশন করে লাঠি হাতে লয়ে বলল, ‘নেংটি ইঁদুরগুলোকে আজ শেষ করে ফেলব।’বাবলা যথাস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। বস বুক ফুলিয়ে গাড়ির পাশে যেয়ে মাথা কাত করে বাড়ি দিতেই ইঁদুরটা তেড়ে এগুল।হেই বড় ইঁদুরকে তেড়ে আসতে দেখে বস চিৎ হয়ে পড়ে চিঁক দিয়ে বলল, ‘বাবলা, আমারে বাঁচা!’ সমাপ্ত।

Category: ব্লগ

About kobiabdul

Previous Post:পায়ের আওয়াজ
Next Post:একাত্তরের আত্মঘাতের ইতিহাস

eBangla.org