আমাদের বেঁচে থাকা কথাটা শুনতে কেমন যেন হলেও, আমার মনে হয় ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের ভাববার আছে। কী ভাবে বেঁচে থাকে আমাদের মত মানুষেরা। প্রসঙ্গ ক্রমে চলে আসে, আমাদের মত মানুষ বলতে আসলে আমি কী বুঝাচ্ছি। আমি মধ্যবিত্ত শ্রেনীর। যে শ্রেনীটিকে টিকে থাকার জন্য আজন্ম কষ্ট করতে হয়। তার উপর দেশের রাজনৈতিক নানা পট পরিবর্তন কিন্তু আমাদেরকেই সবার প্রথম আঘাত করে থাকে।
জন্ম থেকে মৃত্যু একটা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে জন্মানো একজন মানুষকে সংগ্রাম করে যেতে হয়। হতে পারে সেটা অর্থ উপার্জন, অথবা আমোদ ফূর্তি। মধ্যবিত্তদের সব থেকে বড় অসুবিধাটা পক্ষান্তরে সতর্কতা হলো টাকা নিয়ে চিন্তা করা। সবখানে আমাদের টাকার কথা ভেবে যেতে হয়। তাই ফূর্তি বলেন আর মহাভোজ বলেন সব কিছুই কিন্তু একটা সীমানার মধ্যে থেকে যায়।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থাটা এমনই যে একজন মধ্যবিত্তের মাথায় এসব মজ্জাগত হয়ে যায়। তাকে বদলানো যায় কিন্তু বদলানো খুব কঠিন। টাকা পয়সার টানাপোড়েন তেমন একটা না থাকলেও কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে টাকা পয়সার সমস্যাটাই বেশি থাকে। দাম্পত্য জীবনে কন্দোল বলেন, আর প্রেমিকার সাথে খুনসুটি বলেন সব কিছুর পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কিন্তু টাকাই জড়িত।
তো আমাদের বেঁচে থাকাটা টাকার আপেক্ষিকতার উপরেই নির্ভর করে। আমাদের আমোদ প্রমোদ সব কিছু। তো মধ্যবিত্তরা একটা জাল থেকে কখনই বের হতে পারে না, কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া। যেমন ধরুণ একটা ছেলে জন্মগ্রহণ করে, তারপর মায়ের ভদ্র ছেলেটির মত স্কুলে যায়, ফিরে আসে। পরিবারের বন্ধনে থাকা আরকি। এরপরে ছেলেটির লেখা পড়ার পাট চুকলে ছেলেটি বিয়ে করে। এক পরিবারের থেকে আরেকটি পরিবারের বন্ধনে পরে যায়। আগেরটাও যেমনি নিজের পরেরটাও তেমনি নিজের। তাই তাকে দুটো পরিবারের মধ্যে টানাপোড়েনে বাঁচতে হয়। বউয়ের সাথে দু’টো প্রেমের কথা বলা, আর এই একটু ঘুরতে যাওয়া ছাড়া তার আর করার কিছুই থাকে না। এমনি করে রিটায়ার্মেন্টের দিন চলে আসে। নিজের বাচ্চারা বড় হয়। তাদের বিয়ে হয়। এইতো মধ্যবিত্তের জীবন চক্র। এটা মোটামুটি আমরা হাতে একে নিতেই পারি। যেমন ছোট বেলায় নাইট্রোজেন চক্র এঁকেছিলাম।
জীবনে ফূর্তি বলতে আছে অনেক কিছুই বলার মত। যা আসলে মধ্যবিত্তের বৃত্তে থেকে এক গ্লাস পূর্ণ মনেই হয়। কিন্তু এর বাইড়ে কী আছে তা আমরা খুজেও দেখার চেষ্টা করি না। কেন করবো?
ব্যাতিক্রম সব বিত্তেই থাকে। তবে ব্যাতিক্রম কিন্তু অবস্থা সাপেক্ষে। যেমন যদিও আমাদের হাতে আঁকা চিত্রের মতই হয়ে থাকে নাইট্রোজেন চক্র, কিন্তু মাঝে মাঝে নাইট্রোজেনও কম বেশি উতপাদন হয়ে থাকে, কিছু ব্যাতিক্রমের জন্য।