• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

বাংলা ব্লগ । Bangla Blog

এভারগ্রীন বাংলা ব্লগ

  • ই-বাংলা
  • লাইব্রেরি
  • হেলথ
  • ইবুক

ভূত-পেত্নী এবং আমাদের পরী

February 24, 2016 by শ্রাবণ আকাশ

গ্রামের দক্ষিণ দিকটা ফাঁকা পাথার–ফসলি জমি, গরুছাগলের চারণভূমি। গ্রামের পশ্চিম দিক থেকে বেঁকে এসে দক্ষিণের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বড় খাল। তার পাড় দিয়ে কাঁচা রাস্তা। পরবর্তী গ্রামটা মাইল তিনেক দক্ষিণে।

দক্ষিণের ঐ গ্রামটাতে মাঘী পূর্ণিমাতে মেলা বসত। বাড়ি থেকে আদেশ থাকত–মেলা থেকে সন্ধ্যার আগে ফিরতে হবে; ভয় থাকত–সন্ধ্যার আগে না ফিরলে আসার পথে ভূতে ধরবে।

ভূত থাকত পাথারের মধ্যে। খালের পাড় ধরে রাস্তা দিয়ে এই দুই গ্রামের মাঝামাঝি জায়গার গিয়ে দাঁড়ালে ঠিক পূর্ব দিকে পাথারের মাঝখানে একটু উঁচু জায়গা। বড় একটি বটগাছ; চারদিকটা জঙ্গলের মত হয়ে আছে। আর পশ্চিমদিকের পাথারের ঠিক মাঝখানে একটি জলাশয় ঘিরে অনেকগুলো তালগাছ। বড় ভূতটা এক পা বটগাছে, আরেক পা তালগাছের উপর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। কাউকে একলা পেলেই ঘাড় মটকে ওই বটগাছের জঙ্গলটায় নিয়ে যেত। এই বড় ভূতটাকে ভয় পেতাম। সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরতে চেষ্টা করতাম।

দলবেঁধে যেতাম, ফিরতামও দলবেঁধে। মাঝামাঝি জায়গাটায় এসে সবাই প্রায় জড়াজড়ি হয়ে দ্রুত হাঁটতাম। ভয় ছিল–একা হলেই তো ভূতে ছোঁ-মেরে নিয়ে যাবে! হাঁটায় কেউ পিছনে পড়ে গেলে চিৎকার করে কান্না জুড়ে দিত। গ্রামে ফিরে এদেরকে ভীতু প্রমাণ করার কী আপ্রাণ চেষ্টা আর হাসাহাসিই না হত! কেউ কেউ বলত–ভয়ের কিছু নেই, ভূতের গল্প সব মিথ্যা কথা। বটতলার জায়গাটা নাকি এককালে শ্মশান হিসাবে ব্যবহৃত হত।

শ্মশান হলেও কাউকে ওখানে পোড়াতে দেখি নি। কিভাবে পোড়ানো বন্ধ হল, কিভাবে জায়গাটা পরিত্যক্ত হয়ে গেল? কেউ বলত জঙ্গলের ভিতরে ডাকাতদের আড্ডাখানা, গেলে আর ফেরত আসার উপায় ছিল না। তাই ভয়তে কেউ আর ওখানে যায় না। আবার কেউ বলত–ভূতের পাশাপাশি বটগাছে পেত্নীও আছে, সাদা শাড়ি পরে ডালে দোল খায়–অনেক বুড়োরাই নাকি দেখেছে।

একদিন নিজেও দেখলাম। তবে সাদা শাড়ি নয়; রঙিন শাড়ি। পেত্নীও নয়; পরী। রাতে সারা গ্রামে তোলপাড়–পরীকে পাওয়া যাচ্ছে না। কানাঘুষা চলে–যে ছেলের সাথে খাতির করত, তার সাথে ভেগে গেছে। কেউ বলে–জোর করে কারা তুলে নিয়ে গেছে। ভোরবেলা খবর এলো, পরীকে পাওয়া গেছে! কেউ পুলিশে খবর দিতে গেলো, বাকিরা ছুটল বটতলার দিকে। আমরা ছোটরাও ভয় ভুলে বড়দের পিছু নিলাম।

বটগাছের একটা ডালে এলোমেলো হয়ে পরী ঝুলছে।

Category: ব্লগTag: কুসংস্কার, গল্প

About শ্রাবণ আকাশ

Previous Post:জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’একটি শ্রেষ্ঠ সমকামী কবিতা !!!
Next Post:কবি শফিকুল ইসলামের জীবনী/ নিজাম ইসলাম

eBangla.org