কাজ-কর্ম থাকলে সকালে ঘুম থেকে ওঠা একটা অষ্টমাচার্য ব্যাপার হয় বটে। কিন্তু এই যে এখন কাজ-কর্ম নেই, অথচ সকালে একটু বেশি ঘুমাব, সেটি হবার নয়; ঠিক সময়ে ঘুম ভেঙে যাবে। হাজারো চেষ্টা করেও আর ঘুমের রাজ্যে প্রবেশ করা যায় না।
তারপর ঘুম থেকে উঠেই শুরু হও খাওয়া। সেই কবে দাঁতের ডাক্তার বলেছিলেন, খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করতে। কিন্তু সারাদিন ধরে খাচ্ছি তো খাচ্ছিই। ব্রাশটা কখন করব! এদিকে পেটটা আবার বড় হচ্ছে। কাজের সময় কত ভাবি যে একটু ছুটি পেলেই সঠিক সময়ে সঠিক খাবারটি খাব আর দৌড়িয়ে পেটটা কমিয়ে ফেলব। এখন আবার কাজ না পাওয়া পর্যন্ত মোবাইলে অফুরন্ত সময়। মোবাইলের সময় ব্যাপারটা বুঝলেন তো? আগে তো ঘড়িতে সময় থাকত, এখন থাকে মোবাইলে।
এক সময় মোবাইল জিনিসটা খুব প্রিয় ছিল। সেই যে ‘যার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই’, সেই বালিকার প্রচুর এসএমএস আদান-প্রদান হত। আহা…সেই সময়…! কিন্তু যেই না আমার কাজ-কর্মের আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা দিল, সেই থেকে বালিকাও যেন কেমন হয় যায়। এসব নিয়েও এ দেশের লোকেরা মজা করতে ছাড়ে না; বলে, এদেশে ‘তিন ডব্লিউ’কে (Work, weather, women) বিশ্বাস করার কোনো মানে হয় না। অনেকে শুধু ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখতে বলে। কিন্তু ঈশ্বর আমার আকাশ থেকে দুর্যোগ সরিয়ে নেবে, আমাকে খাওয়াবে, রাতে আমার সাথে ঘুমাবে- সেই বিশ্বাস নিয়ে থাকতে থাকতে ক’দিন ধরে খেয়াল করেছি চুলে পাক ধরতে শুরু করেছে।
চুলে কলপ দেয়াটা বিশ্রী লাগে। ওটা নিজেকে বুড়ো বলে স্বীকৃতি দেয়া। এত সহজে বূড়ো হতে চাই না। ভাবছি চুলে কদম ছাঁট দেব। বাসায় মেশিন আছে। নিজে নিজেই করা যায়। তাছাড়া কাল সবার ছুটি–বড়দিনের ছুটি। কাউকে বললে ফিনিশিংটা দিয়ে দেবে। সেই সাথে ১০/১২টা টাকা বেঁচে যাবে। আসলে টাকা বাঁচানোটা বড় ব্যাপার নয়–খরচ করার মত টাকাই নেই।
দেশে শুনছি টাকার গাছ আছে–কলাগাছ। অনেকেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে। দেশে ফিরে যাব কিনা ভাবছি। তবে দেশের ধর্মাপ্রাণ জনগন যে নাস্তিক-মালাউন বলে গালি দেবে; নমিনেশন বা ভোট–কোনোটাই যে জুটবে না, সেটা বোঝার মত কমনসেন্স এখনো আছে। দেশটাকে নিজের বলে দাবী করার মত ‘স্টুপিড পাগল’ এখনো হয়ে যাইনি।
পাগলের কথা মনে আসতে এখন সারাদিন মাথার মধ্যে পাগলের গা্ন ঘুরপাক খাবে-
পাগল আমি হলাম কেনো, দেখে যাও এসে
বন্ধু আমি ভুল করেছি–তোমায় ভালোবেসে
ও বালিকা, তুমি শুনতে কি পাও–এ গান আমার–এ গান আমার…